সুখ যেখানে লুকানো থাকে

Description একজন ব্যক্তির জীবনে সুখ লুক্কায়িত থাকে তার অনুরাগকে নিয়ন্ত্রণের মাঝে, অনুরাগ হারানোর মাঝে নয়।

একজন ব্যক্তির জীবনে সুখ লুক্কায়িত থাকে তার অনুরাগকে নিয়ন্ত্রণের মাঝে, অনুরাগ হারানোর মাঝে নয়।
আলফ্রেড লর্ড টেনিসন, ব্রিটিশ কবি (১৮০৯–১৮৯২)
 
সুখ যেখানে লুকানো থাকে
 
জ্ঞান আর বৃদ্ধের অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ করার উপায় হলো উদ্ধৃতি রচনা।
বেঞ্জামিন ডিসরেইলি, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও সাহিত্যিক (১৮০৪–১৮৮১)
 
সুখ যেখানে লুকানো থাকে
 
অসীমের শূন্যতার নীরবতা আমাকে ভীষণ ভয় ধরিয়ে দেয়।
ব্লেইজ প্যাসকেল, ফরাসি দার্শনিক, গণিতবিদ ও পদার্থবিদ (১৬২৩–১৬৬২)
 
সুখ যেখানে লুকানো থাকে
 
নোবেল পুরস্কার স্বেচ্ছায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন জঁ পল সার্ত্রে (বাঁয়ে) ও লে দুক তো (ডানে)
 
নোবেল পুরস্কার স্বেচ্ছায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন জঁ পল সার্ত্রে (বাঁয়ে) ও লে দুক তো (ডানে)
 
কোলাজ: একটু থামুন

লাভ-ক্ষতির হিসাব তুচ্ছ করে আজীবন মানবকল্যাণে কাজ করেছেন, এমন মনীষীর নামের তালিকা কম দীর্ঘ নয়। সেই তালিকায় এমন দুজনের নামও রয়েছে, যাঁরা কর্মফলের আশা তো করেনইনি, এমনকি নোবেলের মতো লোভনীয় স্বীকৃতিও পায়ে ঠেলে দিয়েছিলেন।

১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার কমিটি মানবকল্যাণে ব্রতী মনীষীদের পুরস্কৃত করে আসছে। সে বছর থেকে আজ পর্যন্ত কেবল দুজনের নাম পাওয়া যায়, যাঁরা স্বেচ্ছায় নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফরাসি দার্শনিক জঁ পল সার্ত্রে এবং ভিয়েতনামের সংগ্রামী রাজনীতিবিদ লে দুক তো—নোবেলের দীর্ঘ ইতিহাসে কেবল এই দুজনই স্বেচ্ছায় পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। জানা যায়, বার্ট্রান্ড রাসেলও নোবেল নিতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সোভিয়েত সরকারের চাপে পড়ে রুশ সাহিত্যিক বরিস পাস্তেরনাক সাহিত্যে নোবেল পেয়েও নিতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন
 
 

ফরাসি দার্শনিক-সাহিত্যিক জঁ পল সার্ত্রের অসাধারণ আত্মজীবনী লে মো। এই বইয়ের সূত্রে ১৯৬৪ সালে তাঁকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ হিসেবে জানান, বর্তমানে নোবেল এমন এক সম্মান, যা পাশ্চাত্যের লেখক এবং প্রাচ্যের বিপ্লবীদের বাক্‌রুদ্ধ করে দেয়। তিনি আরও বলেন, আলজেরিয়ায় যুদ্ধ চলাকালে তাঁরা ১২১ জনের স্বাক্ষরিত বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন, তখন তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হয়নি। দিলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে সম্মানিত করা হয়েছে বলে তাঁরা তা গ্রহণ করতেন। সংগ্রামের শেষে পুরস্কৃত হতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

আধুনিক অস্তিত্ববাদের জনক জঁ পল সার্ত্রের জন্ম প্যারিসে, ১৯০৫ সালে। ফরাসি ও জার্মান ভাষায় শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম দার্শনিক গ্রন্থ ইমাজিনেশন। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেন মিত্রবাহিনীর পক্ষে। এক বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন জার্মানদের হাতে বন্দী হয়ে। শেষে লেখালেখি পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। একের পর এক রচনা করেন অনবদ্য উপন্যাস, প্রবন্ধ, ডায়েরি ও নাটক। রাজনীতি করেছেন, ১৯৪৯ সালে একটি রাজনৈতিক সংগঠনও গড়ে তোলেন। ১৯৫২ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি সম্মেলনে যোগ দেন। সারা জীবন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন বলিষ্ঠ কণ্ঠে। ১৯৬৬ সালে বার্ট্রান্ড রাসেলের উদ্যোগে গঠিত ‘যুদ্ধাপরাধ আদালত’-এর প্রথম সদস্য হিসেবে যোগ দেন সার্ত্রে। এমনকি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানের বর্বর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানান তিনি। সার্ত্রে মারা যান ১৯৮০ সালে।

 
 

১৯৭৩ সালে ভিয়েতনামের বিপ্লবী নেতা লে দুক তো এবং মার্কিন জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারকে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে নোবেল কমিটি। ১৯৭৩ সালের প্যারিস শান্তি চুক্তি ভিয়েতনামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে বলে নোবেল কমিটি মনে করে, তাই তারা এই চুক্তির উদ্যোক্তা তো এবং কিসিঞ্জারকে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু লে দুক তো পুরস্কার নিতে অসম্মতি জানান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভিয়েতনামে প্রকৃত শান্তি ফিরে আসেনি। যেহেতু শান্তিই প্রতিষ্ঠা হয়নি, সেহেতু তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেন না। যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি হয়, তা ছিল একটি লোকদেখানো উদ্যোগ। কেননা, চুক্তির পরও যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবে দক্ষিণ ভিয়েতনামের বুর্জোয়া প্রেসিডেন্ট নুয়েন ভ্যান থিওকে উত্তরের বিপ্লবীদের দমনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখে। হো চি মিনের নেতৃত্বে তো এবং তাঁর সমর্থকেরা দক্ষিণের বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থা হটিয়ে ১৯৭৬ সালে সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনাম প্রতিষ্ঠা করে।

ভিয়েতনামের অন্যতম নেতৃস্থানীয় বিপ্লবী লে দুক তোর জন্ম ১৯১১ সালে। ১৯৩০ সালের দিকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ভিয়েতনামে ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কারাভোগ (১৯৩০-৩৬ এবং ১৯৩৯-৪৪) করেন। ১৯৪৫ সালে হ্যানয়ে এসে হো চি মিন ও ভো নুয়েন গিয়াপের সঙ্গে যোগ দিয়ে গড়ে তোলেন ভিয়েতনাম রেভল্যুশনারি লিগ। ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ ভিয়েতনামের নেতা ছিলেন লে দুক তো। ভিয়েতনাম ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য ছিলেন বলে তাঁকেই দক্ষিণের বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হয়। গড়ে তোলেন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এনএলএফ)। এনএলএফ দীর্ঘ সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৭৫ সালে দেশি-বিদেশি প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনাম প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৯০ সালের ১৩ অক্টোবর লে দুক তো শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তথ্যসূত্র: ব্রিটানিকা ডটকম, নোবেল প্রাইজ ডটওআরজি, টাইম ডটকম ও অক্সফোর্ড স্কুলিং

 
বিজ্ঞাপন
 
একটু থামুন থেকে আরও পড়ুন
মন্তব্য করুন
 
 
 
 

কঠিন প্রশ্ন

এক লোক গেছে ঋণ নিতে। ঋণদাতারা নানান প্রশ্ন করছে।

একপর্যায়ে প্রশ্ন করল, ‘আপনার তিন সন্তান, তাই তো?’

লোকটা বলল, ‘হ্যাঁ। তিন সন্তান আমার।’

ঋণদাতার প্রশ্ন, ‘মেয়ে কজন?’

লোকটা বলল, ‘একজনও নয়।’

ঋণদাতা জিজ্ঞেস করল, ‘তাহলে ছেলে কজন?’

ওজন কমানো

সবির সাহেব হঠাৎ করে স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে উঠেছেন। খুব নাকি নিয়মকানুন মানছেন।

সেদিন এক অনুষ্ঠানে গিয়ে লোকমানে সাহেবের সঙ্গে তার কথা হচ্ছিল।

সবির সাহেব: ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন সকালে উঠে ঘোড়ায় চড়ে বেড়াতে বের হই।

লোকমান সাহেব: লাভ হলো কিছু?

সবির সাহেব: কাল দেখলাম ঘোড়াটার ওজন ১০ কেজি কমে গেছে।

মন খারাপের কারণ

শাহেদের মন খারাপ।

রাশেদ: কি রে দোস্ত, মন খারাপ কেন তোর?

শাহেদ: আর বলিস না, একটা বই কেনার জন্য বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলাম।

রাশেদ: টাকা দেয়নি?

শাহেদ: না, বইটা নিজেই কিনে এনেছে।

দৌড় প্রতিযোগিতা

একটা ট্রফি হাতে নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ঘরে ঢুকল এক লোক।

তার স্ত্রী বলল, ‘একি! এত হাঁপাচ্ছ কেন? এই ট্রফিটাই–বা কোথায় পেলে?’

লোকটা বলল, ‘দৌড় প্রতিযোগিতায় দুজনকে হারিয়ে এটা পেলাম।’

স্ত্রী বলল, ‘মাত্র তিনজন নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা?’

লোকটার জবাব, ‘হ্যাঁ, প্রথমে আমি, তারপর পুলিশ আর সবার পেছনে এই ট্রফির মালিক।’

বিজ্ঞাপন

Abdilur rohim Bhai

1 Blog posts

Comments